রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলের (ইডিএফ) ঋণসীমা কমিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এবার সর্বোচ্চ ২ কোটি ডলার ঋণ নেওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে। এর আগে আড়াই কোটি ডলার দেওয়া হতো। অন্যান্য ক্যাটাগরির জন্য একইভাবে কমানো হয়েছে ঋণ। ঠিক সময়ে যারা অর্থ ফেরত দিতে ব্যর্থ হবেন তাদের আরও ৪ শতাংশ দণ্ড সুদ দিতে হবে।
রোববার (৯ এপ্রিল) ঋণসীমা কমানোসংক্রান্ত এসব নির্দেশনা ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
সার্কুলারে বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, বিজিএমইএ ও বিটিএমএ’র সদস্য প্রতিষ্ঠান ব্যাক টু ব্যাক এলসির বিপরীতে পণ্য আমদানিতে সর্বোচ্চ ২ কোটি ডলার ঋণ নিতে পারবে। এতদিন যা ছিল আড়াই কোটি ডলার। আর করোনায় বিশেষ ছাড়ের আওতায় গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত সর্বোচ্চ তিন কোটি ডলার পর্যন্ত ঋণ নেওয়ার সুযোগ ছিল। বিকেএমইএর সদস্য প্রতিষ্ঠান এবং চামড়াজাত পণ্য ও পাদুকা রপ্তানিকারকদের ঋণসীমা কমিয়ে দেড় কোটি ডলার করা হয়েছে। আগে যা ২ কোটি ডলার ছিল। এ ছাড়া বাংলাদেশ ডাইড ইয়ার্ন এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিডিওয়াইইএ) সদস্যদের দেড় কোটি ডলার থেকে এক কোটি ডলারে আনা হয়েছে।
রপ্তানিকারকদের জন্য ব্যাক টু ব্যাক এলসির আওতায় কম সুদে ডলারে ঋণ দিতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে ১৯৮৯ সালে গঠিত হয় ইডিএফ। ২০২০ সালের এপ্রিলে করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরুর পর ইডিএফের আকার ৩৫০ কোটি ডলার থেকে বাড়িয়ে করা হয় ৫০০ কোটি ডলারে। এরপর দফায় দফায় আরও বাড়িয়ে ৭০০ কোটি ডলারে উন্নীত করা হয়। আর সুদহার নামানো হয়েছিল ২ শতাংশে।
এরমধ্যে আইএমএফের শর্ত মেনে ঋণ নেওয়ার পর আবার ইডিএফ কমাতে বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সম্প্রতি এ তহবিল থেকে ঋণ নিতে কয়েক দফায় সুদ বাড়ানো হয়েছে। সর্বশেষ গত ২ ফেব্রুয়ারি শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ সুদ বাড়িয়ে ব্যাংকগুলোর জন্য ৩ শতাংশ এবং গ্রাহক পর্যায়ে সাড়ে ৪ শতাংশ করা হয়েছে। এ ছাড়া কোনো ঋণ সময়মতো ফেরত না এলে ৪ শতাংশ দণ্ড সুদ আরোপের বিধান করা হয়েছে।
এদিকে ডলারের ওপর চাপ কমাতে সম্প্রতি অফশোর ব্যাংকিং ইউনিট (ওবিইউ) পরিচালন নীতিমালায় শিথিলতা আনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সাধারণভাবে ওবিইউ নিজস্ব ইউনিটের বাইরে তহবিল দিতে পারে না। তবে ডলার সংকটের এ সময়ে শিথিলতার আওতায় আগামী জুন পর্যন্ত ওবিইউগুলোকে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের মূলধনের ২৫ শতাংশ মূল ব্যাংকিং ইউনিটে দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। এখন শিথিলতা আরও বাড়িয়ে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের মূলধনের ৪০ শতাংশ পর্যন্ত মূল ব্যাংকিংয়ে দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। তবে নিজ ব্যাংকের বাইরেও এ তহবিল দেওয়া যাবে বলে জানানো হয়েছে।
Leave a Reply