বঙ্গবাজারের ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের বিনা সুদ অথবা স্বল্প সুদে ঋণ দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের।
তিনি বলেন, বঙ্গবাজারের আগুনে চার হাজারের বেশি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সরকারের কাছে আমাদের আবেদন, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হবে। দরকার হলে বিনা সুদে অথবা স্বল্প সুদে তাদের ঋণ দিতে হবে।
মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে পার্টির ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখা আয়োজিত ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
জি এম কাদের বলেন, বঙ্গবাজারের ব্যবসায়ীরা সারাবছর ঈদের জন্য অপেক্ষা করে থাকেন। ঈদের আয় দিয়ে তারা সারাবছর সংসার চালান। নিজের সব পুঁজি, স্বল্প সময়ের জন্য উচ্চ হারের সুদে টাকা নিয়ে ঈদের বাজারের জন্য মালামাল কেনাকাটা করেন। হঠাৎ ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে সব দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। চার হাজারের বেশি দোকান পুড়ে গেছে। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, দুই হাজার কোটি টাকার মালামাল পুড়ে একদিনেই তারা নিঃস্ব হয়ে গেছে। দুর্যোগে যারা কষ্ট পাচ্ছেন। আমরা তাদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।
দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির কারণে কেউ ইচ্ছে করলেই ভালো কাজ করতে পারছেন না উল্লেখ করে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, আমরা সাহায্য দিতে বলেছি, দেখা যাবে- এমন লোককে সাহায্য দেওয়া হচ্ছে, যার দোকানই বঙ্গবাজারে ছিল না। যারা সরকারি দল করেন, তারাই সাহায্য ও ঋণ পাবেন। যার ঋণ দরকার, তিনি পাবেন না। অথবা ঋণ পেতে হলে অর্ধেক টাকা ঘুস হিসেবে দিতে হবে। দুঃখের বিষয় হলো- এমন বাংলাদেশের জন্য বাংলাদেশ স্বাধীন হয়নি। ভুক্তভোগীরা দুঃখ-কষ্টে যাদের কাছে পাবে, তারা লুটপাট করবে, এটা হতে পারে না।
জিএম কাদের বলেন, আমাদের জীবনের নিরাপত্তা নেই, সম্পদেরও নিরাপত্তা নেই। সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে, মানুষের নিরাপত্তা ও জীবনমানের উন্নয়ন নিশ্চিত করা। সেজন্যই দেশের মানুষ সরকারকে দেশ চালাতে টাকা-পয়সা দেয়। সরকারে থাকাদের বাড়ি, গাড়ি, থাকা-খাওয়া নিশ্চিত করেন দেশের গরিব মানুষ। সরকার দেশ ও জনগনের নিরাপত্তা ও উন্নয়নের পরিবর্তে নিজেদের নিরাপত্তা ও উন্নয়ন নিয়ে ব্যস্ত।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, প্রতিদিন জিনিসের দাম বাড়ছে। মানুষের আয় বাড়ছে না। অনেকে চাকরি ও ব্যবসা হারাচ্ছেন। দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নষ্ট করে ফেলেছে। টাকার দাম কমছে। তাই জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। দেশের রিজার্ভ শেষ করার কারণে টাকার দাম কমে গেছে। সরকারে হাতে টাকা নেই। রপ্তানি আয়ের চেয়ে ব্যয় অনেক বেশি। ব্যয় কমানোর কারণে বাজারে মালামাল ও কাঁচামালের অভাব দেখা দিয়েছে।
Leave a Reply