বিশেষ সংবাদদাতা
পুলিশের সঙ্গে বিএনপির সংঘর্ষে নিহত শাওনের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। ছেলের শোকে বারবার জ্ঞান হারাচ্ছেন মা ফরিদা বেগম। স্বজনদের মধ্যেও চলছে আহাজারি। তাদের সান্ত্বনা দিচ্ছেন আশপাশের প্রতিবেশীরা।
শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে ফতুল্লার নবীনগরে শাওনের বাড়িতে গেলে কথা হয় তার ভাই ফরহাদের সঙ্গে।
তিনি বলেন, ‘আমরা তিন ভাই এক বোন ছিলাম। শাওন সবার ছোট। তাই সে সবার আদরের ছিল। তাকে হারিয়ে মা পাগল হয়ে গেছে। কাল থেকেই বার বার জ্ঞান হারাচ্ছেন।’
ফরহাদ আরও বলেন, ‘আমি এ হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার চাই। আমাদের জানা ছিল না শাওন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল। কাল ছবি দেখার পর জানতে পারলাম সে যুবদল করে।’
শাওনের আরেক ভাই মিলন বলেন, ‘আমরা জানতাম না সে রাজনীতি করতো কি-না। আমার ভাইকে হত্যার বিচার চাই।’
শাওনের মামা মোতাহার হোসেন বলেন, ‘একই পরিবারে চারটি শোক বইতে হচ্ছে বোন ফরিদাকে। কিছুদিন আগে স্বামীকে হারিয়েছেন। তার আগে এক মেয়েকে হারিয়েছেন। এরপর এক ছেলেকে হারান। সবশেষে শাওনকে হারিয়েছেন। এত শোক কীভাবে সইতে পারে একজন মানুষ।’
এর আগে শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে (ভিক্টোরিয়া) বড় ভাই মিলন প্রধান ও মামা মোতাহার হোসেনের কাছে শাওনের মরদেহ হস্তান্তর করা হয়। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে শাওনের মরদেহ বাড়িতে আনা হয়। রাত দেড়টার দিকে নবীনগর শাহওয়ার আলী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জানাজা শেষে নবীনগর কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
এদিকে রাতে শাওনকে যুবদল নয় যুবলীগ কর্মী দাবি করে তার বাড়ির সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। একই সঙ্গে তারা সেখানে অবস্থান নেন। বিপরীতে বিএনপির নেতাকর্মীরা আসতে চাইলে তাদের বাধা দেওয়া হয়। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।
বৃহস্পতিবার সকালে নারায়ণগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ ঘটে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে শাওন মারা যান। এছাড়া পুলিশের ১৫ জন এবং বিএনপির প্রায় অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হন। বিএনপির আহত নেতাকর্মীদের মধ্যেই অনেকেই গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
ইসমাইল/সিবি৫২
Leave a Reply